অন্যান্যট্যুর প্লানবাংলাদেশভিডিওভ্রমন কাহিনী

শশী লজ | Shashi Lodge - ময়মনসিংহ

শশী লজ (Shashi Lodge) ময়মনসিংহ শহরের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী জমিদারবাড়ি। এটি ময়মনসিংহ রাজবাড়ির একটি অংশ, যা জমিদার আচার্য চৌধুরী পরিবারের উত্তরাধিকার।

📜 নির্মাণ ইতিহাস:

  • ময়মনসিংহের জমিদার মহারাজা সূর্যকান্ত আচার্য চৌধুরী প্রথমে এই প্রাসাদটি নির্মাণ করেন।
  • ১৮৯৭ সালের ভয়াবহ ভূমিকম্পে রাজবাড়ির মূল অংশ ধ্বংস হয়ে যায়।
  • পরে তার দত্তকপুত্র শশীকান্ত আচার্য চৌধুরী (Shashikanta Acharya Chowdhury) ১৯০৫ সালে প্রাসাদটি নতুন করে নির্মাণ করেন।
  • তার নাম অনুসারেই ভবনটির নাম হয় শশী লজ।

🏰 স্থাপত্য বৈশিষ্ট্য:

  • শশী লজ প্রায় ৯ একর জমির ওপর নির্মিত।
  • ইউরোপীয় ও ভারতীয় স্থাপত্যশৈলীর মিশ্রণে তৈরি।
  • ভেতরে রয়েছে বিশাল হলঘর, মার্বেল পাথরের কারুকাজ, ঝাড়বাতি, রঙিন কাঁচের জানালা, স্নানঘর ও ফোয়ারা।
  • চারপাশে বাগান, পুকুর ও ঘাট ছিল, যা এর সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।

ঐতিহাসিক গুরুত্ব:

  • ব্রিটিশ আমলে এখানে নানান উৎসব, সভা ও সামাজিক অনুষ্ঠান হতো।
  • জমিদার পরিবার এই প্রাসাদ থেকেই প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতো।
  • শশীকান্ত আচার্য ছিলেন দানশীল ও সংস্কৃতিপ্রেমী ব্যক্তি। তাই প্রাসাদটি শুধু বসবাস নয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র হিসেবেও পরিচিত ছিল।

🇧🇩 পরবর্তী সময়:

  • পাকিস্তান আমলে শশী লজ সরকারি কাজে ব্যবহার শুরু হয়।
  • ১৯৫২ সাল থেকে এটি মহিলা শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকে।
  • বর্তমানে এটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে সংরক্ষিত।
  • সরকার ভবনটি সংস্কার করে জাদুঘরে রূপান্তরের পরিকল্পনা নিয়েছে।

অবস্থান ও ভ্রমণের তথ্য:

  • অবস্থান: ময়মনসিংহ সদর উপজেলার জজকোর্ট এলাকা, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে; ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে খুব কাছে।

অবস্থা ও আকর্ষণ:

  • ভবনটির অবস্থা কিছুটা জরাজীর্ণ, অনেক অংশ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে দুর্গত হয়েছে।

প্রধান আকর্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে:

  • সামনে সুন্দর একটি বাগান এবং ফোয়ারা, যেখানে একসময় ভেনাস দেবীর মূর্তি থাকত।
  • ভবনটির স্থাপত্যশৈলী, বিভিন্ন ঘর, গম্বুজ, মার্বেল কাজ ও কলঙ্কার প্যাটার্ন ইত্যাদি।
  • ভেনাসের মূর্তিটি সম্প্রতি (২০২৪-এ) ভাঙে গেছে এবং এটি এখন আর অবস্থায় নেই।

ভ্রমণ পদ্ধতি:

  • ঢাকা থেকে বাসে: বাসে গিয়ে “মাসাকান্দা বাস টার্মিনালে” নামতে হবে, তারপর অটো বা রিকশা।
  • ট্রেনে যেতে চাইলে কয়েকটি এক্সপ্রেস ট্রেন পাওয়া যায় ময়মনসিংহে; স্টেশনে নেমে রিকশা/অটো ব্যবহার করা যেতে পারে।

প্রবেশ সময়সূচি ও টিকিট মূল্য:

  • সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকে।
  • সাধারণ প্রবেশদর কিছুটা কম, উদাহরণস্বরূপ প্রায় ২০ টাকা।

বিনোদনের খবর জানতে পড়ুনঃ বিনোদন প্রতিদিন

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!