অন্যান্যট্যুর প্লানবাংলাদেশ

গান্ধী আশ্রম, নোয়াখালী

🕊️ গান্ধী আশ্রম, নোয়াখালী — গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসমূহ

📍 অবস্থান:

  • স্থান: জয়াগ গ্রাম, বেগমগঞ্জ উপজেলা, নোয়াখালী জেলা, বাংলাদেশ
  • দূরত্ব: নোয়াখালী শহর থেকে প্রায় ৩০ কিমি উত্তরে
  • গুগল ম্যাপ: Gandhi Ashram Trust, Jayag, Begumganj

🕰️ ইতিহাস:

  • ১৯৪৬ সালের নোয়াখালী দাঙ্গা চলাকালীন গাঁধীজি শান্তি ও সহমর্মিতার প্রচার করতে নোয়াখালী আসেন।
  • তিনি প্রায় ৪ মাস এখানে অবস্থান করেন (নভেম্বর ১৯৪৬ – ফেব্রুয়ারি ১৯৪৭)।
  • এই সময় তিনি হিন্দু–মুসলমান ঐক্য ও মানবতার বার্তা প্রচার করেন।
  • তার অনুসারী বিনোবা ভাবে, মিরাবেন, ও স্থানীয় নেতা অম্বিকা কালিগঙ্গা চৌধুরী আশ্রমের কাজে যুক্ত ছিলেন।

🏛️ প্রতিষ্ঠা:

  • আশ্রমটি প্রতিষ্ঠা করেন অম্বিকা কালিগঙ্গা চৌধুরী, যিনি গাঁধীর অনুপ্রেরণায় নিজের সম্পত্তি দান করেন।
  • প্রথম নাম ছিল “অম্বিকা-কালিগঙ্গা চ্যারিটেবল ট্রাস্ট”, পরবর্তীতে নাম পরিবর্তিত হয়ে হয় গান্ধী আশ্রম ট্রাস্ট (Gandhi Ashram Trust)।

এর উদ্দেশ্য ছিল:

“শান্তি, সত্য ও অহিংসার মাধ্যমে সমাজে নৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন সাধন।”

🎯 বর্তমান কার্যক্রম:

  • গান্ধী আশ্রম বর্তমানে একটি সামাজিক উন্নয়ন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

তাদের প্রধান কার্যক্রমগুলো হলো –

✅ গ্রামীণ উন্নয়ন ও দারিদ্র্য দূরীকরণ প্রকল্প

✅ নারী ক্ষমতায়ন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

✅ শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম

✅ পরিবেশ সংরক্ষণ ও পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি

✅ গান্ধী স্মারক জাদুঘর ও পাঠাগার সংরক্ষণ

📚 স্মারক জাদুঘর:

  • আশ্রমে গাঁধীজির ব্যবহৃত কিছু জিনিসপত্র, ছবি, চিঠি ও ঐতিহাসিক দলিল সংরক্ষিত আছে।
  • এখানে “Peace Museum” নামে একটি জাদুঘর আছে, যেখানে গাঁধীর নোয়াখালী সফরের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে।
  • প্রতি বছর ২ অক্টোবর (গান্ধীজির জন্মদিন) আশ্রমে বিশেষ স্মরণসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।

🧭 গান্ধী আশ্রমের লক্ষ্য দর্শন:

  • “সত্য, অহিংসা ও মানবতার মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠা।”
  • ধর্ম, জাতি, লিঙ্গ নির্বিশেষে সবার প্রতি সহনশীলতা ও সহমর্মিতা ছড়িয়ে দেওয়া।
  • গাঁধীর “Simple Living, High Thinking” নীতিকে বাস্তবে প্রয়োগ করা।

🕓 ভ্রমণ তথ্য:

  • খোলা সময়: প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত
  • প্রবেশমূল্য: নেই (ইচ্ছা অনুযায়ী অনুদান দেওয়া যায়)

🌼 গান্ধী আশ্রমের ঐতিহাসিক গুরুত্ব:

  • এটি বাংলাদেশে গান্ধীজির একমাত্র আশ্রম এবং দক্ষিণ এশিয়ায় তাঁর শেষ শান্তি অভিযানের কেন্দ্র।
  • এখান থেকেই তিনি “শান্তির পথে হাঁটুন, মানবতার জন্য বাঁচুন” বার্তা দেন।
  • আশ্রমটি আজও গাঁধীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে সামাজিক ন্যায় ও মানবিক উন্নয়ন কাজে নিয়োজিত।

🧭 ভ্রমণ টিপস:

  • আশ্রমে প্রবেশের সময় শান্ত ও শালীন পোশাক পরা উচিত।
  • ছবি তুলতে চাইলে অনুমতি নাও (বিশেষত মিউজিয়াম অংশে)।
  • স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বললে তাদের সংস্কৃতি ও ইতিহাস সম্পর্কে অনেক কিছু জানা যায়।
  • চাইলে আশ্রমে দান বা স্বেচ্ছাসেবা করতেও পারো — তারা শিক্ষা ও নারী উন্নয়ন প্রকল্প চালায়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!