অন্যান্যট্যুর প্লানধর্মীয় পর্যটনবাংলাদেশ

খান জাহান আলীর মাজার

খান জাহান আলীর মাজার (Khan Jahan Ali) বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থান, যা বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত। এটি মূলত হযরত খান জাহান আলী (রহ.)-এর সমাধি, যিনি ছিলেন একজন সুফি সাধক, ধর্মপ্রচারক এবং দক্ষ স্থপতি।

🔹 সংক্ষিপ্ত পরিচিতি:

  • 📍 অবস্থান: বারোবাজার, বাগেরহাট, খুলনা বিভাগ, বাংলাদেশ
  • 🕌 স্থাপত্য ধরণ: মুসলিম স্থাপত্য (মুঘল-পূর্ব ইসলামিক স্থাপত্য)
  • 🛠️ নির্মাণকাল: ১৫শ শতকের প্রথমার্ধ
  • 🧔‍♂️ প্রতিষ্ঠাতা: খান জাহান আলী (রহ.)
  • 🏛️ ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য: এটি “ষাট গম্বুজ মসজিদসহ বাগেরহাটের মসজিদ নগরী” অংশ হিসেবে UNESCO World Heritage Site হিসেবে স্বীকৃত।

🔹 খান জাহান আলী (রহ.) কে ছিলেন?

  • তিনি ছিলেন একজন তুর্কি বংশোদ্ভূত সুফি সাধক।
  • ইসলাম প্রচারের জন্য তিনি দক্ষিণ বঙ্গের (বিশেষ করে বাগেরহাট অঞ্চলে) অনেক অবদান রাখেন।
  • তিনি কেবল ধর্মপ্রচারকই নন, দক্ষ প্রশাসক ও নির্মাতা ছিলেন।

🔹 মাজারটির বৈশিষ্ট্য:

  • পুরো মাজার চুন-সুরকির তৈরি।
  • মাজার ঘরের ছাদে একটি একক গম্বুজ রয়েছে।
  • মাজারের পাশেই একটি বড় দীঘি আছে, যেটি “তালার দিঘি” নামে পরিচিত।
  • দীঘির মধ্যে কিছু ‘মাঝার’ কুমির রয়েছে, যাদেরকে মানুষ খাবার দেয় এবং কুমিরদের বিশেষভাবে সম্মান করে।

🔹 দর্শনার্থীদের জন্য তথ্য:

  • 🕰️ ভিজিট সময়: প্রতিদিন খোলা থাকে
  • 💰 প্রবেশ ফি: সাধারণত নেই
  • 🙏 ধর্মীয় নিয়ম: মাথা ঢেকে প্রবেশ করতে হয়
  • 🎉 বার্ষিক ওরস: খান জাহান আলীর মৃত্যুবার্ষিকীতে প্রতিবছর ওরস মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়

🔹 ঐতিহাসিক গুরুত্ব:

  • এটি শুধু একটি ধর্মীয় স্থান নয়, বরং বাংলার প্রাচীন মুসলিম স্থাপত্য ও শহর পরিকল্পনার এক নিদর্শন।
  • UNESCO এই এলাকাকে “Mosque City of Bagerhat” হিসেবে বিশ্ব ঐতিহ্য ঘোষণা করেছে ১৯৮৫ সালে।

🚍 ঢাকা থেকে যাওয়ার উপায়:

  • ✅ ১. বাসে (সবচেয়ে জনপ্রিয় উপায়)
  • ঢাকা → বাগেরহাট সরাসরি বাসে যেতে পারবেন
  • সময় লাগে: প্রায় ৭–৮ ঘণ্টা
  • ভাড়া: AC বাসে ৳৮০০–৳১২০০, নন-AC বাসে ৳৫০০–৳৭০০

বাস কোম্পানি:

Shohagh,Eagle,Hanif,Desh Travels.

📍 গন্তব্য বাসস্ট্যান্ড: বাগেরহাট বাস টার্মিনাল → সেখান থেকে অটোরিকশা/টেম্পু/ভ্যান করে খান জাহান আলীর মাজার (প্রায় ৩–৪ কিমি)

বাস ছাড়ার স্থান (ঢাকায়):

  • গাবতলী বাস টার্মিনাল
  • সায়েদাবাদ
  • কল্যাণপুর
  • আরামবাগ
  • বাস ছাড়ে সাধারণত সকাল, দুপুর ও রাত – তিন সময়েই।

২. ট্রেনে (আংশিক পথে)

  • ঢাকা থেকে খুলনা পর্যন্ত ট্রেনে যান (সুন্দরবন এক্সপ্রেস, চিত্রা এক্সপ্রেস ইত্যাদি)
  • খুলনা থেকে বাগেরহাট → লোকাল বাস বা মাইক্রোবাস/টেম্পু (প্রায় ৪০ কিমি, ১–১.৫ ঘণ্টা)

৩. নিজস্ব গাড়িতে:

  • ঢাকা → ভাঙা → বরিশাল এক্সপ্রেসওয়ে → গোপালগঞ্জ → নড়াইল → বাগেরহাট
  • সময় লাগবে: ট্রাফিক ছাড়া প্রায় ৬–৭ ঘণ্টা
  • গুগল ম্যাপ ব্যবহার করলে সহজেই রুট পেয়ে যাবেন

🕌 বাগেরহাট পৌঁছানোর পর:

  • শহর থেকে ৩–৪ কিমি দূরে খান জাহান আলীর মাজার
  • অটোরিকশা / ভ্যান / রিকশা সহজে পাওয়া যায়

📌 পরামর্শ:

  • মাজারে ভিজিট করার সময় মাথা ঢেকে প্রবেশ করুন, এটা ধর্মীয় শিষ্টাচার
  • কুমিরদের খাবার দিতে চাইলে স্থানীয়দের থেকে কিনে নিতে পারবেন (মাঝে মাঝে মাজারের লোকজন ডাক দিলে কুমির আসে)
  • কাছেই ষাট গম্বুজ মসজিদ দেখার সুযোগ মিস করবেন না!

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!